প্রতিষ্ঠান পরিচিতি
বাদশাহ্ ফয়সল ইন্স্টিটিউট (স্কুল এন্ড কলেজ)
আধুনিক ও নৈতিক মূল্যবোধের সমন্বয়ে সুশিক্ষিত, আদর্শ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি করার মহান অভিলক্ষ্যে ১৯৭৬ সালে বাদশাহ্ ফয়সল ইন্স্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সৌদি বাদশাহ্ ফয়সল বিন আব্দুল আজিজ এর স্মরণে পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে যখন তাঁর নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছিল ঠিক সেই মূহুর্তে বাংলাদেশেও কতিপয় শীর্ষস্থানীয় সকরকারি কর্মকর্তা ও ইসলামি চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে ১৯৮১ সালে গঠিত হয় বাদশাহ ফয়সল ট্রাস্ট, যার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি জনাব এ. কে এম বাকের। এই ট্রাস্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাদশাহ ফয়সল ইনস্টিটিউট (আবাসিক/অনাবাসিক) এর কার্যক্রম শুরু হয় ঢাকাস্থ লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে। পরবর্তীতে বাদশাহ্ ফয়সল ট্রাস্ট তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট থেকে মোহাম্মদপুর থানার অন্তর্গত শ্যামলী রিং রোড সংলগ্ন এলাকায় নিজস্ব জমি বরাদ্দ প্রাপ্ত হয়। বরাদ্দকৃত জমি তখন প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণের উপযোগী ছিল না বিধায় প্রয়োজনীয় সংস্কার ও মাটি ভরাট করে খুব দ্রুত গতিতে একটি ইমারত নির্মাণ করা হয় এবং লালমাটিয়ার ভাড়াবাড়ি থেকে প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয় বর্তমান শ্যামলীস্থ রিং রোড সংলগ্ন নিজস্ব ক্যাম্পাসে।
প্রাতিষ্ঠানিক রুপ লাভের পর ১৯৮৩ সালে এ ক্যাম্পাসে প্রথম শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আলমগীর। ট্রাস্টী বোর্ডের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও দিক নির্দেশনা এবং অধ্যক্ষের দক্ষ পরিচালনায় খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রতিষ্ঠনটির সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় ছাত্র-ছাত্রীর ও ক্লাসের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে বৃদ্ধি পেতে থাকে শিক্ষক ও কর্মচারির সংখ্যাও। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে শিক্ষার মান ক্রমাগত উন্নত হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও আশাতীত ভাবে বেড়ে যায় এবং সময়ের দাবীতে ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু হয় কলেজ শাখার এবং প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে বাদশাহ্ ফয়সল ইন্স্টিটিউট (স্কুল এন্ড কলেজ) নামকরণ করা হয়।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক অভিজ্ঞ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। সীমানা প্রাচীরে সুরক্ষিত ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের জলাবদ্ধতা দূরীভূত করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশের। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে কোলাহল পূর্ণ নগর জীবনের মাঝেও বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর সম উপস্থিতি পৃথক পৃথক ভাবে উপলব্ধি ও অনুভবের প্রকৃত পরিবেশ বিদ্যমান আমাদের এ প্রিয় ক্যাম্পাসে।
বাদশাহ্ ফয়সল ইন্স্টিটিউট (স্কুল এন্ড কলেজ) এর রয়েছে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্তির গৌরবময় ইতিহাস। ১৯৯৫ সালে ঢাকা বোর্ডের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন তৎকালীন অধ্যক্ষ জনাব একে এম ফরিদ উদ্দিন খাঁন। ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিভাধর শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবেই জাতীয় পর্যায়ের জাতীয় সংগীতসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মেধার স্বাক্ষর রেখে চলছে।
জাতীয় কারিকুলামের পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে বিশেষ কিছু ব্যতিক্রম শিক্ষাদান ব্যবস্থা যা ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের নিরন্তর আকৃষ্ট করে থাকে। ব্যতিক্রম এ শিক্ষা কার্যক্রম প্রতিষ্ঠানকে দান করেছে বৈচিত্রপূর্ণ স্বকীয়তা।
বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদের সুযোগ্য সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব, সেনাবাহিনীর অবসর প্রাপ্ত শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত পরিচালনা কমিটির সার্বিক সহযোগিতায় এ প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আন্তরিকভাবে সচেষ্ট। তাঁর ঐকান্তিক প্রচ্ষ্টোর সাথে নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছে বর্তমান দক্ষ ও অভিজ্ঞ অধ্যক্ষ লে কর্নেল ড. এ কে এম মাকসুদুল হক পি এস সি (অব:)। আশা করা যায় অচিরেই প্রতিষ্ঠানটি তাঁর অভিষ্ঠ লক্ষ্যে উপনীত হতে পারবে ইনশা আল্লাহ।